বোটানিক্যাল গার্ডেন সবুজের আচ্ছাদন আর নির্মল বাতাসের শান্ত নিরিবিলি স্থান হিসেবে পরিচিত । ময়মনসিংহ জেলার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পুরাতন বৃক্ষ পত্র নদীর তীরে এই বিশ্ববিদ্যালয় ২৫ একর জায়গা জুড়ে বিরল প্রজাতির উদ্ভিদের সংগ্রহ। ১৯৬৩ সালে করা হয় বোটানিক্যাল গার্ডেন। এই গার্ডেন যে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে তা নয়, বরং পুরো ময়মনসিংহ শহরের নামের পাশে ছন্দ এনে দিয়েছে।
দেশের মূল্যবান উদ্ভিদ প্রজাতি বিশেষ করে বিরল প্রজাতি হার্ট জাতির ঔষধি ও সুগন্ধি জাতীয় উদ্ভিদ সংরক্ষণের জন্য রয়েছে পট হাউস নামে বিশেষ সংরক্ষণাগর। এই গার্ডেনে প্রায় ৬০০ টি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে ।নিম্ন বিশ্বাস ধরনের উল্লেখযোগ্য কিছু উদ্ভিদের নাম উল্লেখ করা হলো:
ঔষধি উদ্ভিদ
এখানকার ঔষধি উদ্ভিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: অশ্বগন্ধা, কর্পূর, আগর, ব্রানিয়া, অ্যান্থেরিয়াম।
ফুল জাতির উদ্ভিদ
বিভিন্ন ধরনের ফুলের মধ্যে রয়েছে, সিলভিয়া, যোনিয়া, হৈমন্তী, আফ্রিকান, নিউলিফ, ক্যামেলিয়া, ট্রাবেভুইয়া, অ্যাক্টার, কসমস, রাবেলি, রঙ্গন।
ফল জাতির উদ্ভিদ
ফলের মধ্যে রয়েছে, স্টার আপেল, কমলা, আঙ্গুর, আমেরিকান পেয়ারা, প্যাশন ফল এবং বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফল।
বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদ
কারিলিফ, ফলসা, কালাবাস, মনহোটা, পেয়ালা, বনডুবি, হোহাকাঠ , মাক্কী, অর্জুন, উদাল, পানবিলাস, বয়রা, হর্তকি, টিকমা ইত্যাদি।
কাকটাস ও অন্যান্য সংবেদনশীল উদ্ভিদের জন্য গার্ডেনটিতে রয়েছে বড় দুটি গ্রীন হাউস ।
বছরের প্রায় সময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় চার লাখেরও বেশি এই গার্ডেনে ঘুরতে আসে। কেউ আসে বিনোদনের জন্য, আবার অনেকে আসে শিক্ষা সফরে, এখানকার সুন্দর্য বৃদ্ধি দর্শনার্থীদের অধিক বিনোদনের জন্য বহু বন্য পশু পাখির প্রতিকৃতি নির্মাণ করা হয়েছে। এই বোটানিক্যাল গার্ডেনে দর্শনার্থীদের আলাপ – চারিতা ও বিশ্রামের জন্য রয়েছে অনেকগুলো বিশ্রাম বেঞ্চ। বেঞ্চগুলি আবার বেশিরভাগ স্থাপন করা হয়েছে নদীর তীরে। যার ফলে নদীর পাড়ে বসে উপভোগ করা যায় বাতাসের গন্ধ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
সবমিলিয়ে ময়মনসিংহ বোটানিক্যাল গার্ডেন অসাধারণ সৌন্দর্যের স্থান। যেখানে অনেক শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে। যেখানে নাম না জানা অনেক উদ্ভিদের দেখা পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে এই গার্ডেনে প্রবেশ করতে পারে। তবে সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য বুপন সংগ্রহ করতে হয়। সপ্তাহের রবি থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ২ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। আর সপ্তাহের ছুটির দুই দিন শুক্র ও শনিবার সকাল ৯ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা থাকে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে অনেক বাস বা ট্রেন ছেড়ে যায় ময়মনসিংহ জেলা শহরে। সেখান থেকে আপনি রিক্সা বা অটো রিক্সা নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেন যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
ময়মনসিংহ শহরে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে আমির ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল মুস্তাফিজ, হোটেল সিলভার, ক্যাসেল হোটেল, হেরা ইত্যাদি।
কোথায় খাবেন
ময়মনসিংহ শহরে অনেক খাবার হোটেল রয়েছে। তার মধ্যে ধানসিঁড়ি, হোটেল সারিন্দা ইত্যাদি।
আরো পড়ুন:মালনি ছড়া চা বাগান
Leave a Reply