সাগর কন্যা দ্বীপ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বীপ। বরিশাল বিভাগের অন্তর্গত এই জেলা নাম ছিল দক্ষিণ শাহবাজপুর যা পড়ে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ভোলা। ভোলাকে আবার সাগর কন্যা ও বলা হয়। ব্যস্ত জীবনকে আপনি একটু যদি প্রশান্তি দিতে চান তাহলে সাগর নদী পরিবেষ্টিত দ্বীপ জেলা ভোলা ভ্রমণ করতে পারেন। চাইলে আপনি খুব অল্প খরচে এক দিনে ভোলার কয়েকটি দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করতে পারেন।
আপনি যে কোন জেলার বাসিন্দা হতে পারেন, তবে ভোলা ভ্রমণের জন্য সবথেকে ভালো হয়। বরিশাল হয়ে ভোলার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করা, বরিশাল লঞ্চ ঘাট থেকে ভোলা উদ্দেশ্য বিভিন্ন সময় কয়েকটি লঞ্চ ভোলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেয়, এক্ষেত্রে লঞ্চ ভাড়া জনপ্রতি 120 টা। সময় লাগবে তিন ঘন্টা। আবার কম সময়ে স্পিড বোর্ডে, মাত্র 40 মিনিটে ভোলা যাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে জনপ্রতি পড়বে৩০০ টাকা। আবার সড়ক পথে ও ভোলা যাওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে বেশ সময় সাপেক্ষ তবে সবথেকে ভালো হয় স্পিডবোর্ডে যাত্রা শুরু করলে, কারণ নদীর দুপাশের মনোরম দৃশ্য উপভোগ আর খোলামেলা পরিবেশে আপনার যাত্রাটি দারুন হবে।
আবার ঢাকা থেকে সরাসরি লঞ্চে করে ভোলা যাত্রা করতে পারেন। যার যে রকমের সুবিধা হয়।
বরিশাল থেকে লঞ্চ বা স্পিডবোটে আপনাকে নামতে হবে। ভোলার বেদুরিয়া লঞ্চঘাটে সেখান থেকে আপনি প্রথ
মে যেতে পারবেন উপ-মহাদেশের সবচেয়ে উঁচু ওয়াজ টাওয়ারে।
বেদুরিয়া লঞ্চ ঘাট থেকে বাস অথবা মহেন্দ্র বা মোটরসাইকেল করে এই টাওয়ারে যাওয়া যায়।
লঞ্চ ঘাট থেকে এই টাওয়ারের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। কিন্তু রাস্তা ভালো হওয়ার কারণে সময় লাগে মাত্র দুই ঘন্টা। তবে মোটরসাইকেলে সময় কিছুটা কম লাগবে।
লঞ্চ ঘাট থেকে দুই ঘন্টার যাত্রা শেষে আপনি পৌঁছে যাবেন আইফোন টাওয়ার ক্ষেত উপমহাদেশের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ার যেকুব টাওয়ারের সামনে। এই টাওয়ার থেকে ১০০ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। iphone টাওয়ারে আদেশে নির্মিত ১৬তলা বিশিষ্ট এই ওয়াচ টাওয়ারে প্রতি তলায় ৫০ জন, করে পুরো টাওয়ারে একসাথে৫০০ জন অবস্থান করতে পারবে। দূরের অবস্থান স্পষ্ট ভাবে দেখার জন্য এখানে রয়েছে রায়না কুলারের ব্যবস্থা ।
এখান থেকে দেখা যাবে সংরক্ষিত বনাঞ্চল, চর, কুকড়ি – মুকরি তারুয়া সৈকত, স্বপ্নদ্বীপ, মনপুরা এবং হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ, আর বঙ্গোপসাগর তো রয়েছে। তবে এখানকার সবচেয়ে মন মুগ্ধকর লক্ষ করা যায় রাতের বেলায়।
এই টাওয়ারে লিফটে ওঠার প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা। আর সিঁড়ি দিয়ে ওঠার প্রবেশ মূল্য ৬০ টাকা দিয়ে একটু উপরে উঠলে দেখতে পাবেন খাবার ক্যান্টিন। আর সবচেয়ে মজার বিষয়টি হল এখান থেকে ৩৬০ তে আশেপাশে পুরো এলাকা দেখতে পাবেন। এই টাওয়ার থেকে প্রকৃতি দৃশ্য দেখে মনে হয় যেন আমি সবার উপরে আর প্রকৃতি সব দৃশ্য আমার চোখের সামনে যা সবার মনটা আকৃষ্ট করে তোলে।
যেকুব টাওয়ারের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার পর আপনারা চলে যেতে পারেন যেকুব মিয়ার খামারবাড়ি। এই টাওয়ার থেকে খামার বাড়ির দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। যেতে সময় লাগতে পারে এক ঘন্টার মত। যা খুব সহজেই মোটর সাইকেলে বা অটো করে যাওয়া যায়। মোটরসাইকেল ভাড়া পড়বে ১৭০ টাকা। আর অটো ভাড়া পড়বে ১০০ টাকা। এই খামারবাড়ি প্রবেশের টিকিট মূল্য হচ্ছে ২০ টাকা। ভোলার চরফ্যাশন এলাকার অন্যতম দর্শনীয় স্থান হচ্ছে এই যেকুব মিয়ার খামারবাড়ি। যা অবলোকন করার জন্য হাজারো দর্শক ভিড় জমায় এখানে। বিভিন্ন পাহাড়ি প্রজাতির গাছ আর বিভিন্ন ফুলের সমারহে
এখানকার পরিবেশে বেশ চমৎকার। এখানে রয়েছে বাঘ, সিংহ, হরিণ, জিরাফ, হাতি, এরকম বিভিন্ন পশু আদলে তৈরি করা হচ্ছে স্থাপনা। রয়েছে দুটি mini হেলিপ্যাড পাহাড়ের আদলে তৈরি করা হয়েছে সু উচ্চ আধুনিক কেল্লা। এখানে ছাতার নিচে রয়েছে বসার স্থান। যেখানে সময় কাটানোর মনোরম পরিবেশ দর্শনীয় এই স্থানটিতে এসে ঘুরে বেড়ানো ছাড়াও ছবি তোলা আড্ডা দেওয়া বা অবসর সময় কাটানোর এক অন্যতম স্থান। মানুষের জন্য এই খামারবাড়ি অন্যতম স্থান, এই খামারবাড়ি সকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে। এর ভিতরে রিসোর্ট তৈরি করা হয়েছে, ইচ্ছে করলে আপনারা এখানে রাতেও থাকতে পারেন। এই খামারবাড়িটি বিখ্যাত, এখানকার নানান রকম বাহারি ফুলের বাগানের জন্য এই ফুলের বাহারি রূপ দেখার জন্য আপনাদের এখানে আসতে হবে। ডিসেম্বর – ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই খামার বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে আপনারা যেতে পারেন বেতুয়া প্রশান্তি পার্কে।
বেদুয়া প্রশান্তি পার্ক থেকে খামারবাড়ির দূরত্ব সাতাশ কিলোমিটার। যেখানে মোটরসাইকেলে বা অটোতে সেখানে যাওয়া যায়। মোটর সাইকেল ভাড়া ২০০ টাকা। অটো ভাড়া ১৫০ টাকা। পর্যটন কেন্দ্র দ্বীপ ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় মেঘনার
কলঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃতির এক অপরূপ এই বেতুয়া প্রশান্তি পার্ক। এখানে বসে সূর্যোদয়ের দৃশ্য মেঘনা নদীর মন মাতানো ঢেউয়ের খেলা আর রাতের আঁধারে আলোকসজ্জার মনোরম দৃশ্য মন কেড়ে নেয় ঘুরতে আসা সকল মানুষের।
বেতুয়া পার্কে সৌন্দর্য উপভোগ করার পর আপনি যেতে পারেন শেখ রাসেল শিশু পার্কে। এই পার্কে প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। তবে এখানকার সৌন্দর্য ফুটে উঠে রাতের বেলায়, বাহারি রঙের আলোক সজ্জা আপনার মন কেড়ে নেবে। এখানকার বিভিন্ন রাইটে ঘোরার পাশাপাশি আপনি উপভোগ করতে পারবেন। 5D তে মুভি দেখা।
সর্বোপরি বলা যায় সাগর কন্যা দ্বীপ জেলা ভোলা ভ্রমণ আসলেই রোমাঞ্চকর। যা মনে ও ছবি ফ্রেমে ধরে রাখার মত, তাই সকলকেই আমন্ত্রণ রইল এই সাগর কন্যা দ্বীপ জেলা ভোলা ভ্রমণে।
আরো পড়ুন :বোটানিক্যাল গার্ডেন
বোটানিক্যাল গার্ডেন সবুজের আচ্ছাদন আর নির্মল বাতাসের শান্ত নিরিবিলি স্থান হিসেবে পরিচিত । ময়মনসিংহ জেলার…
মালনি ছড়া চা বাগান হল বাংলাদেশের সিলেট জেলায় অবস্থিত। যা উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীনতম চা বাগান।…
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর একটি প্রত্নতবরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী শহরে অবস্থিত। যেটি বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। ত্ত্ব সংগ্রহে…
প্রয়াস সেনা বিনোদন পার্ক সবাই একটু কম বেশি চিত্তবিনোদনের জন্য বিভিন্ন বিনোদনের পাট এর খোঁজ…
বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত। চিড়িয়াখানাটি বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে…
শিল্পচার্জ জয়নুল আবেদীন পার্ক ১৯৭০ সালে ময়মনসিংহ শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা পুরাতন ব্রক্ষপুত্র।…