Chattogram

ঝুলন্ত সেতু (Jhulonto brige) – রাঙ্গামাটি

ঝুলন্ত সেতু রাঙ্গামাটি শহরের শেষ প্রান্তে কাপ্তাই লেকের উপর অবস্থিত। ৩৩৫ ফুট লম্বা একটি সেতু। এই সেতুটি রাঙ্গামাটি জেলা শহর হাতে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই সেতু রাঙ্গামাটি জেলার প্রধান আকর্ষণ। এই সেতুকে সিম্বল অফ রাঙ্গামাটি বলা হয়। রাঙ্গামাটি জেলা ভ্রমণে গিয়ে ঝুলন্ত সেতু দেখেনি  এমন মানুষ পাওয়া যায় না, কারণ রাঙ্গামাটি গিয়ে এই ঝুলন্ত সেতু না দেখে না ফেরত আসে না। এই সেতুতে দাঁড়িয়ে কাপ্তাই হৃদের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করতে পারবেন। হৃদের সৌন্দর্য দেখে আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন, এই সেতুটি দেখতে খুব সুন্দর, দুটি পাহাড়ের উপর সংযোগ ঘটিয়ে কাপ্তাই হৃদের উপর ঝুলে আছে এই সেতুটি। ঝুলন্ত সেতুটিকে কেন্দ্রীয় করে এখানকার স্থানীয় জনগণ তাদের ক্ষুদ্র পরসা সাজিয়ে বসে আছে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য।

শীত মৌসুমে সেতু  পার হয়ে অপর পাড়ের পাহাড়ের চূড়ায় পিকনিক করার জন্য অনেক পর্যটক রাঙ্গামাটির এই ঝুলন্ত সেতুর নিকট আসে। কারণ এখানে রয়েছে মনোরম দৃশ্য, আরো রয়েছে রং বেরঙের ঝুলন্ত সেতু, দুইপাশের বিচ্ছিন্ন পাহাড়ি একত্রিত করেছে। তাছাড়া সেতুর উপর দিয়ে চলাচলের সময় ঝাকুনি আলাদা শিহরণ সৃষ্টি করে। সেতুর একপাশে শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে দোলনা আর ওপার পাশে রয়েছে আদিবাসী জনগোষ্ঠী, চাইলে আদিবাসীদের জীবন যাত্রা দেখে আসতে পারেন। এই সেতু দেখার জন্য পর্যটন কর্পোরেশনকে জনপ্রতি ২০ টাকা ফি  দিতে হবে। কাপ্তাই লেক ভ্রমণের জন্য সেতুর নিচে ইঞ্জিন চালিত বোর্ড রয়েছে। ঘন্টা প্রতি ভাড়া হবে ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। 

ঝুলন্ত সেতু কখন যাবেন

দেখার জন্য সারা বছরই ভ্রমণ করা যায়। তবে শীত মৌসুম হল পাহাড় আর অরণ্যর শহর রাঙ্গামাটি ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময়।তবে বেশি শুতে যাওয়া উচিত নয়। আবার বর্ষাকালেও যাওয়া উচিত নয়। কারণ বর্ষাকালে অনেকটা সময় সেতুটি পানির নিচে ডুবে যায়। তাই এই সময় ভ্রমণ করা অনেকটা বিপদজনক। শীতের সময় এখানে ভ্রমণ করা সুবিধাজনক। তাই পর্যটকরা প্রতিবছর  সেতু ভ্রমণের জন্য রাঙ্গামাটি ছুটে আসে। 

ঝুলন্ত সেতু কিভাবে যাবেন

 ঢাকা হতে রাঙ্গামাটি

 ঢাকা ফকিরপুর মোড় ও সায়দাবাদ রাঙ্গামাটি অসংখ্য বাস কাউন্টার রয়েছে। এই বাসগুলো সাধারণত সকাল এবং রাতে রাঙামাটির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এসি এবং নন এসি দুই ধরনের বাস পাওয়া যায়। নন এসি বাসের ভাড়া৭০০থেকে ৯০০টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ১০০০থেকে ১৫০০টাকা

 রাঙ্গামাটি থেকে  সেতু

 রাঙ্গামাটি শহরের তবলছড়ি অথবা বনরুপা থেকে অটো রিক্সা বা সিএনজিতে করে সরাসরি ঝুলন্ত ব্রিজ যাওয়া যায়। বনরুপা থেকে ভাড়া হবে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা আর তবলছড়ি থেকে ভাড়া হবে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।

কোথায় থাকবেন

 রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন মানের সরকারি বেসরকারি অনেক হোটেল রয়েছে। রাঙ্গামাটিতে পুরাতন বাস স্ট্যান্ড ও রিজার্ভ বাজার এলাকায় বেশ কিছু হোটেল রয়েছে। তবে হোটেলে যাওয়ার আগে একটু ভেবে যাবেন কারণ ঝুলন্ত ব্রিজ এর কাছে হোটেল নিলে ভালো হবে। যাতে করে সহজে সেখানে থেকে ঝুলন্ত সেতু এবং কাপ্তাই লেক ভ্রমণ করা যায়। নিম্নে কয়েকটি হোটেলের বর্ণনা দেওয়া হলো:

  • হোটেল স্কয়ার পার্ক, দোয়েল চত্বর, রাঙ্গামাটি – ০১৭৪০৫৭৭০৬
  • নিউজ হিল ভিউ,  বনরুপা, রাঙ্গামাটি – ০১৮৩৩৩৬০৩৩৩
  • হোটেল গ্রিন ক্যাসেল, রিজার্ভ, রাঙ্গামাটি – ০১৭৪০৫৭৭০৬
  • হোটেল মতিহল, রিজার্ভ বাজার, রাঙ্গামাটি – ০১৭০৫৩৭৩৭৩০
  • পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স, ঝুলন্ত ব্রিজ রোড, রাঙ্গামাটি – ০৩৫১৬৩১২৬

কোথায় খাবেন

 রাঙামাটিতে বিভিন্ন মানের খাবার হোটেল রয়েছে তাদের নিজস্ব ঘরনার খাবার তৈরি করে থাকে। খাবারের মান খুব ভালো হয়। এখানে বিভিন্ন ধরনের খাবার পাওয়া যায়।

রাঙ্গামাটি জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

  • রাজবন বিহার।
  • উপজাতীয় টেক্সটাইল।
  • সাজেক ভ্যালি।
  • কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ প্রকল্প।
  • যমচুক।
  • পর্যটন মোটেল।
  • কর্ণফুলী হৃদ।
  • শুভলং ঝর্ণা।
  • চাকমা রাজার বাড়ি।
  • টুক টুক ইকো ভিলেজ।
  • কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান।
  • রাজস্থানী ও ঝুলন্ত সেতু।
  • নৌবাহিনী পিকনিক স্পট।
  • ফুরমোন পাহাড়।
  • বেতবুনিয়া ভু উপগ্রহ কেন্দ্র।
  • উপজাতিয় জাদুঘর।
  • কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

সতর্কতা ও ভ্রমণ টিপস

  • সেতুতে একসাথে ১৫ থেকে ২০ জনের বেশি চলাচল করা যাবে না।
  • সেতুতে রেলিং এর উপর বসা যাবে না।
  • সেতুতে তার ধরে ঝুলা ঝুলি করা যাবে না।
  • লেকের পানিতে সাঁতার কাটা বিপজ্জনক।
  • লেকের পানিতে নামা যাবে না।
  • ঝুলন্ত ব্রিজ আমাদের জাতীয় সম্পদ একে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

 আরো পড়ুন:সুন্দরবন 

Shahana

Recent Posts

বোটানিক্যাল গার্ডেন( Botanical Garden) –  ময়মনসিংহ

বোটানিক্যাল গার্ডেন সবুজের আচ্ছাদন আর নির্মল বাতাসের শান্ত নিরিবিলি স্থান হিসেবে পরিচিত । ময়মনসিংহ জেলার…

55 years ago

মালনি ছাড়া চা বাগান (Malnicherra Tea Garden) –  বাংলাদেশের প্রথম ও বৃহত্তম চা বাগান

মালনি ছড়া চা বাগান হল বাংলাদেশের সিলেট জেলায় অবস্থিত। যা উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীনতম চা বাগান।…

55 years ago

সাগর কন্যা দ্বীপ – জেলা ভোলা ভ্রমণ

সাগর কন্যা দ্বীপ  বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দ্বীপ।  বরিশাল  বিভাগের অন্তর্গত এই জেলা নাম ছিল দক্ষিণ…

55 years ago

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর (varendra Research Musem) – বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর একটি প্রত্নতবরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী শহরে অবস্থিত। যেটি বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। ত্ত্ব সংগ্রহে…

55 years ago

প্রয়াস সেনা বিনোদন পার্ক (Proyash Sena Binodon Park) – রংপুরে বিনোদন পার্ক

প্রয়াস সেনা বিনোদন পার্ক সবাই একটু কম বেশি চিত্তবিনোদনের জন্য বিভিন্ন বিনোদনের পাট এর খোঁজ…

55 years ago

বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা ঢাকা মিরপুর(Bangladesh National Zoo) – ঢাকা মিরপুর

বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত।  চিড়িয়াখানাটি বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে…

55 years ago